ইসরায়েলি হামলায় লেবানন থেকে বের হওয়ার পথ ধ্বংস: বিপাকে স্থানীয়রা
- By Jamini Roy --
- 04 October, 2024
ইসরায়েলি আকাশ ও স্থলপথের হামলায় লেবাননের পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। বৈরুতসহ দেশের সীমান্ত এলাকায় চলমান বোমাবর্ষণের ফলে সাধারণ মানুষ চরম বিপদের মুখে পড়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) লেবানন ও সিরিয়ার মধ্যে অবস্থিত মাসনা সীমান্ত ক্রসিংয়ে ইসরায়েলের একটি বড় ধরনের হামলা ঘটে, যার ফলে বহু লেবাননবাসী নিরাপত্তার খোঁজে সিরিয়ার দিকে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে, মাসনা ক্রসিংয়ের মাধ্যমে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধ করার জন্য তারা এই হামলা চালিয়েছে। হামলায় সড়কের বিশাল অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে, ফলে যানবাহনের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে অনেক মানুষ গর্ত পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পালানোর চেষ্টা করছেন। হামলার ফলে খাদ্য ও মানবিক সহায়তার পরিবহনেও বিশাল জটিলতা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক ম্যাথিউ হোলিংওর্থ জানিয়েছেন, মাসনা ক্রসিংয়ের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহের সহজ সুযোগ এখন প্রায় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক ইমরান রিজা বলেন, ইসরায়েলের চলমান হামলায় লেবাননে বেসামরিক জনগণের জন্য সত্যিকার বিপর্যয় নেমে এসেছে। গত ১০ দিনে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ সিরিয়ায় পালিয়েছে এবং অন্তত ১০ লাখ মানুষ সরাসরি হামলার শিকার হয়েছে। বেসামরিক স্থাপনায় হামলার ফলে জনগণের আতঙ্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর কর্মকর্তা রুহা আমিন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হামলার ফলে লেবাননে প্রায় ৯০০টি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এই কেন্দ্রগুলোতে স্থান সংকুলান সম্ভব হচ্ছে না, ফলে অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে, রাস্তায় বা পার্কে রাত কাটাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার প্রধান ম্যাথিউ লুসিয়ানো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন লেবাননে কর্মরত প্রবাসী নারী গৃহকর্মীদের জন্য। সংঘাতের ফলে অনেক গৃহকর্মী চাকরি হারাচ্ছেন এবং বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তারা গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে মানবিক সহায়তা খোঁজার সাহস পাচ্ছেন না। ফলে তাদের অবস্থাও অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
লেবাননের বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের হামলা দেশটির অবকাঠামো এবং বেসামরিক জনগণের জন্য অভূতপূর্ব বিপর্যয় ডেকে আনছে। এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান না হলে, মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।